
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডে প্রান হারালেন জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৭), যিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে অভাবের সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ছোট্ট একটি দোকানঘরই ছিল সংসারের ভরসা
জাহাঙ্গীর হোসেনের জীবনের বড় সম্বল ছিল বাবার রেখে যাওয়া ভিটেমাটি ও বাড়ির পাশে একটি ছোট দোকানঘর। সেই দোকানঘরই একসময় বন্ধক দিতে বাধ্য হন অভাবের চাপে। সম্প্রতি সেই বন্ধক দেওয়া দোকানটির ভাড়া তুলতে গিয়েই তাঁর জীবন শেষ হয়ে যায়।
ঘটনার বিবরণ: রাজনৈতিক অফিসেই খুন!
গত বুধবার (৩০ জুলাই ২০২৫), মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে দোকান ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মারধরের শিকার হন জাহাঙ্গীর। অভিযোগ অনুযায়ী, গত বছরের আগস্টে তোতা মিয়া প্রধান নামের এক রাজনৈতিক নেতা বার্ষিক ১০ হাজার টাকায় দোকানটি ভাড়া নেন এবং সেটিকে বিএনপির অফিসে রূপান্তর করেন। তবে ভাড়া সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই সংঘর্ষ ও পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ড ঘটে।
শোকাহত পরিবার ও এলাকাবাসী
আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের ছায়া। তাঁর বৃদ্ধ মা আয়শা বেগম ছিলেন পাগলপ্রায় অবস্থায়। ছোট বোন রেহানা ভাইয়ের মৃত্যুতে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। প্রতিবেশীরাও স্তব্ধ হয়ে যান এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে।
কেন এমন ঘটল?
একটি দোকানঘর, যেখানে রাজনৈতিক কার্যালয় তৈরি হয়েছে, সেখানে একজন সাধারণ অসহায় মানুষকে প্রাণ দিতে হল—এটি সমাজের জন্য এক ভয়াবহ বার্তা। যখন রাজনীতি মানুষের জীবিকা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতেই পারে।
প্রশাসনের কাছে দাবি
পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।